মনে হবে বোবা জঙ্গল থেকে কে যেন অমানুষিক এক কান্না নিংড়ে নিংড়ে বার করছে। মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো
মৎস্য শিকারে আগ্রহী গল্পের নায়ক ও তার দুই বন্ধু বাসে চেপে ধীর-মন্থর-দোদুল্যমান গতিতে কোনোরকমে তিনজোড়া পা ও তিনটি মাথা নিয়ে পরিচিত পৃথিবী ছাড়িয়ে অনুভূতিহীন কুয়াশাময় তেলেনাপোতায় এসে পড়ে। সামনের ঘন জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে গল্পকথকের মনে হয়, একটি কাদা জলের নালা কে যেন কেটে দিয়েছে।
সেই নালার মতো রেখাও কিছুটা দূরে গিয়ে দু-ধারের বাঁশঝাড় আর বড়ো বড়ো ঝাঁকড়া গাছের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেছে। তিন বন্ধু আগ্রহের সঙ্গে নালার দিকে চেয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পর অন্ধকার আরও ঘনিয়ে এলে অন্ধকারে পরস্পরের মুখ ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে ওঠে। মশাদের ঐকতান আরও ধারালো হয়ে ওঠে।
গোরুর গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে করতে বিরক্তি যখন চরমে ওঠে তখন ফিরতি বাসে কলকাতায় ফেরার কথা তারা ভাবতে শুরু করে-ঠিক সেইসময় জঙ্গলের ভিতরকার সরু রাস্তার শেষ প্রান্ত থেকে অপূর্ব এবং শ্রুতিবিস্ময়কর একটি শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।
সেই শব্দ শুনেই গল্পকথকের মনে হয়- “বোবা জঙ্গল থেকে কে যেন অমানুষিক এক কান্না নিংড়ে নিংড়ে বার করছে।" সেই অদ্ভুত শব্দটি যে তাদের নিতে আসা গোরুর গাড়ির শব্দ, সে কথা বুঝতে পারে তারা। তাই সেই শব্দ শুনে 'প্রতীক্ষায় চঞ্চল' হয়ে ওঠে তাদের মন। অনতিবিলম্বেই একটি গোরুর গাড়ি এসে তাদের প্রতীক্ষার অবসান ঘটায়।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url