ফ্যাসিবাদের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো

আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ফ্যাসিবাদের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো নিয়ে আলোচনা করব।

ফ্যাসিবাদের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো

ফ্যাসিবাদ

ইংরেজি 'Fascism' শব্দটি এসেছে ইতালীয় শব্দ 'Fascismo' থেকে। আবার 'Fascio' শব্দটি লাতিন 'Fasces শব্দের সঙ্গে সম্পর্কিত যার অর্থ-একগুচ্ছ লাঠি ও একটি কুঠার দ্বারা শৃঙ্খলিত রূপ।

অর্থাৎ, এই শব্দটি দ্বারা যে বিষয়গুলিকে ইঙ্গিত করা হয় তা হল- 'সংহতি', 'ক্ষমতা' বা 'শক্তি', 'বাধ্যকতাবোধ' প্রভৃতি। ফ্যাসিবাদের মূল বিষয়গুলি হল-
 

শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত শাসন

ফ্যাসিবাদ বলতে এমন একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনোপ্রকার বিরোধিতা বা সমালোচনা সহ্য করা হয় না, যেখানে শিল্প-বাণিজ্য প্রভৃতি সকল বিষয়ই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন।

এই শাসনব্যবস্থায় প্রাধান্য পায় উগ্র জাতীয়তাবাদ ও কমিউনিস্ট বিরোধিতা। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে চরম প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাই ফ্যাসিবাদের মূল উদ্দেশ্য।
 

সর্বক্ষমতাবাদী

ফ্যাসিবাদ রাষ্ট্রের সর্বক্ষমতাসম্পন্ন (totalitarian) বৈশিষ্টাকে তুলে ধরে। এই মতাদর্শ অনুসারে সামাজিক সমস্যাগুলির সমাধানকল্পে যে সংহতি গড়ে তোলার কথা বলা হয় সেখানে অন্য কোনো মতের গুরুত্বকে অস্বীকার করা হয়; অর্থাৎ ফ্যাসিবাদী মতই শ্রেষ্ঠ ও চূড়ান্ত বলে এই মতবাদ মনে করে।

তারা চায় দেশের সবরকম পরিকল্পনার বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন সাধিত হবে ফ্যাসিস্ট মতানুসারে। এই কারণে তাদের কাছে যা প্রতিষ্ঠা করা চিন্তার বাইরে, তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে বলপ্রয়োগেও তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। দ্বিতীয় কোনো মত প্রকাশের এখানে কোনোরূপ সুযোগ নেই।
 

হিংসার আশ্রয়

ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে এক অন্যতম পদ্ধতি হল হিংসার আশ্রয়গ্রহণ। ফ্যাসিবাদে ঘোষিত অপর এক নীতি হল এই মতের বিরোধী ব্যক্তিদের উচ্ছেদসাধন।

সর্বক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রসৃষ্টির একটি উদ্দেশ্য হল হিংসার প্রকাশ। ফ্যাসিবাদ যে রাষ্ট্রব্যবস্থার উপস্থাপন করে, তা হল নৈতিক ও আদর্শগত বা ভাবগত অস্তিত্বসম্পন্ন রাষ্ট্র।
 

উগ্র জাতীয়তাবাদ

ফ্যাসিবাদ তার প্রচারকার্যে উগ্র জাতীয়তাবাদ (racisms)-কে কাজে লাগিয়ে ঘৃণা ও সন্ত্রাসের, প্রতিহিংসা- পরায়ণতার উদ্ভব ঘটায়। এর মধ্য দিয়ে উদারনীতিবাদ, প্রগতিবাদ, মুক্ত অর্থনীতি প্রভৃতি বাধাপ্রাপ্ত হয়।

ট্রিঙ্কে রাষ্ট্রকে শক্তির প্রতীক বলেছেন এবং শক্তি বা ক্ষমতাকেই পূজ্য বলে বিবেচনা করেছেন। এই মতানুসারে ক্ষুদ্র বা ছোটো রাষ্ট্র হল পাপের প্রতীক। তাই রাষ্ট্রের বিস্তারের জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন আছে। এক্ষেত্রে যুদ্ধ কোনো অন্যায় কাজ নয়।

পরিশেষে, ফ্যাসিবাদ 'গণতন্ত্রের' কথা উল্লেখ করলেও তারা ক্ষমতার প্রয়োগ দ্বারা জনসাধারণের অনুগতা কামনা করে এবং তারা বিপ্লবী পন্থায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তিস্থাপনে আগ্রহী।
 

আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। ফ্যাসিবাদের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
🟢 কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url