গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন বা রূপগুলি আলোচনা করো

আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন বা রূপগুলি আলোচনা করো নিয়ে আলোচনা করব।

গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন বা রূপগুলি আলোচনা করো

গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন বা রূপসমূহ

'গণতন্ত্র' বলতে কেবলমাত্র একটি শাসনব্যবস্থা বা সরকারের ধরনকেই বোঝায় না। গণতন্ত্র বলতে এখন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে জনগণের সম্মতি ও রাজনৈতিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত এবং যা সামোর নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। গণতন্ত্র হল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমতার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত এমন একটি

ব্যবস্থা, যেখানে সকলেই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমসুযোগ লাভ করে। গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন বা রূপ (forms) আছে। সারতোরি (Sartori) চার প্রকার গণতন্ত্রের কথা বলেছেন- যেমন-(1) সামাজিক গণতন্ত্র, [2] অর্থনৈতিক গণতন্ত্র, [3] শিল্পভিত্তিক গণতন্ত্র এবং [4] জনগণের গণতন্ত্র।

[1] সামাজিক গণতন্ত্র

সামাজিক গণতন্ত্র বলতে বুর্জোয়া বা সমাজতান্ত্রিক কোনো ধরনের গণতন্ত্রকেই বোঝায় না। এইরূপ গণতন্ত্রের মধ্যে উদারনৈতিক ও সমাজতান্ত্রিকতার বিষয়ের আংশিক মিশ্রণ থাকে। এই ধরনের গণতন্ত্রের লক্ষা হল সামাজিক কল্যাণ ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা।

[2] অর্থনৈতিক গণতন্ত্র

গণতন্ত্রের একটি বিশেষ রূপ হল অর্থনৈতিক গণতন্ত্র। অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের অনুপস্থিতিতে রাজনৈতিক গণতন্ত্র অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। কার্ল মার্কস রাজনৈতিক গণতন্ত্রের কথা বলেননি। তিনি অর্থনৈতিক গণতন্ত্রকেই স্বীকার করেছেন। অর্থনৈতিক গণতন্ত্রেই তাঁর বিশ্বাস ছিল। এই ধরনের গণতন্ত্র অর্থনৈতিক সাম্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ এই গণতন্ত্রে চূড়ান্তভাবে সাম্য প্রতিষ্ঠিত না হলেও, সমাজের অর্থনৈতিক অসাম্য দূর করার জন্য সচেষ্ট থাকে। এইরূপ গণতন্ত্রে ধনী-দরিদ্রের বৈষমা বিলুপ্ত হয়।

(3) শিল্পভিত্তিক গণতন্ত্র

এই ধরনের গণতন্ত্র প্রধানত সংঘ (Guild) তথা সমাজতন্ত্রের ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই ধরনের গণতন্ত্র মনে করে যে, শ্রমিকরা যেহেতু সবরকম সম্পদ উৎপাদনের মূল উৎস, তাই শ্রমজীবী জনসাধারণই হবে তার মালিক। অর্থাৎ, এর উদ্দেশ্য হল শ্রমিকরা স্বতন্ত্রভাবে কারখানার পরিচালন সংস্থা গড়ে তুলবে। সর্ববিধ বন্টন, বিনিময় ও উৎপাদনের দায়িত্ব শ্রমিকরাই পালন করবে।

[4] জনগণের গণতন্ত্র

সাধারণত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এরূপ গণতন্ত্রের ভিত্তি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। পরোক্ষভাবে জনগণ সরকার নির্বাচন করে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। জনকল্যাণের স্বার্থে রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালিত হয়। অপরের শ্রমশোষণের মাত্রা যতখানি সম্ভব অবসান ঘটিয়ে সাম্য প্রতিষ্ঠার দিকে অগ্রসর হয়।

উপসংহার

মার্কসবাদীগণ মনে করেন, কেবলমাত্র রাজনৈতিক সাম্য থাকলেই সর্ববিধ জনকল্যাণ বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য যতক্ষণ না প্রতিষ্ঠিত হবে, ততক্ষণ গণতন্ত্র মুষ্টিমেয় ব্যক্তির গণতন্ত্র হিসেবেই পরিগণিত হবে এবং মুষ্টিমেয় শ্রেণির স্বার্থই রক্ষিত হবে। তাই আপামর জনগণের কল্যাগসাধনের জন্য প্রয়োজন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য সমন্বিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা।

আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন বা রূপগুলি আলোচনা করো এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
🟢 কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url