প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব
আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করব।
ভূগোলশাস্ত্রের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো প্রাকৃতিক ভূগোল। প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে আমরা পৃথিবী ও পৃথিবী সৃষ্টি, ভূঅভ্যন্তরের গঠন, স্তরবিন্যাস, শিলা ও খনিজ, আগ্নেয়গিরি, পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, নদ-নদী, সাগর-মহাসাগর, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, আবহাওয়া, জলবায়ু, মৃত্তিকা, উদ্ভিদ, প্রাণিজগৎসহ পৃথিবীর খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। নিচে প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
১. পৃথিবী সম্পর্কে জ্ঞান লাভ: পৃথিবী কী? কীভাবে পৃথিবীর জন্ম? কীভাবে পৃথিবী বিভিন্ন বাষ্পীয় ও তরল অবস্থার ভিতর দিয়ে বর্তমানরূপ লাভ করেছে তার সুন্দর বিবরণ আমরা প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে জানতে পারি।
২. ভূমিরূপবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ: প্রাকৃতিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ভূমিরূপবিদ্যা। পৃথিবীর কোথায় কী ধরনের ভূমিরূপ এবং তা কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়েছে সে সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের প্রয়োজন।
প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে আমরা আরও জানতে পারি পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থা, শিলা ও খনিজের উৎপত্তি, ভূআলোড়ন, ভূমিকম্প ও তার ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ সম্পর্কে। কীভাবে পাহাড় থেকে নদীর উৎপত্তি হয়ে নদীগুলো সমুদ্রে পতিত হয়েছে সে সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের জন্য ভূমিরূপবিদ্যা পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।
৩. জলবায়ুবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ: প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের মাধ্যমে জলবায়ুবিদ্যা সম্পর্কে বিশদ জানা যায়। পৃথিবীর কোথায় কী ধরনের জলবায়ু, জলবায়ু গড়ে ওঠার কারণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হলে প্রাকৃতিক ভূগোলের জলবায়ুবিদ্যা অধ্যয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।
বায়ুমণ্ডলের গভীরতা, বায়ুর স্তরবিন্যাস, বায়ুর উপাদান, বায়ুর তাপ, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুপ্রবাহের কারণ, বায়ুর শ্রেণিবিভাগ ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠ প্রয়োজন। এছাড়াও প্রাকৃতিক ভূগোলের এ শাখা থেকে বায়ুর আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাতের শ্রেণিবিভাগ, বৃষ্টিপাতের কারণ, কৃষিবলয় ইত্যাদি জানা যায়।
৪, সমুদ্রবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ: পৃথিবীর সাগর, মহাসাগর, আয়তন, গভীরতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হলে প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠ করতে হবে। পৃথিবীর বায়বীয় অবস্থা হতে বর্তমান অবস্থায় রূপান্তরের সময় ভূআন্দোলনের ফলে ভূপৃষ্ঠ, অসমানভাবে সংকুচিত হয়েছে। এর ফলে ভূপৃষ্ঠের কতক অংশ বেশ উঁচু এবং কতক অংশ নিচু হয়েছে।
ভূপৃষ্ঠের সাত ভাগের প্রায় পাঁচ ভাগ (মোট আয়তনের শতকরা প্রায় ৭২ ভাগ স্থান) পানিরাশি দ্বারা আবৃত। ভূপৃষ্ঠের এ উঁচু ও নিচু স্থান যদি না থাকত, তাহলে বারিমণ্ডলের এ বিশাল পানিরাশি দ্বারা ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র ৩ কি.মি. এরও বেশি গভীর পানি দ্বারা আবৃত থাকত। পানিরাশি ও পানিরাশির এ বিন্যাস ও গভীরতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হলে প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠ প্রয়োজন।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, পৃথিবী কীভাবে সৃষ্টি হলো, কেন সৃষ্টি হলো, কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবী তরল ও বাষ্পীয় অবস্থার মধ্য দিয়ে বর্তমান অবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে, কীভাবে পৃথিবীর জলভাগ, স্থলভাগ, বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি হলো, কীভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির কারণে ভূমিরূপের পরিবর্তন হচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান আহরণের জন্য প্রাকৃতিক ভূগোল পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।
আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্ব এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url